করোনাকালীন লকডাউনে ধ্বসে যাচ্ছে বাংলাদেশে বইয়ের মার্কেট, ব্যবসা পরিবর্তন করছেন অনেকে

বাংলাদেশে বর্তমান করোনাকালীন লকডাউনে বইবিক্রেতাদের নিয়ে, বইয়ের বাজার নিয়ে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে যথাক্রমে প্রথম আলো ও বাংলা ট্রিবিউনে৷ প্রতিবেদন দুইটির গুরুত্ব বিবেচনা করে হুবহু প্রকাশ করা হলো

আশা করি এই দুইটি প্রতিবেদন আপনাকে বাংলাদেশের বইবাজারের বর্তমান ধ্বসে যাওয়া পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা দিবে৷ মূল পত্রিকায় প্রতিবেদন দুইটি পড়তে প্রতিবেদনের শুরুতে পত্রিকার নামে / LINK লেখায় ক্লিক করুন৷

— বাংলা সাহিত্যবার্তা

প্রথম আলো প্রতিবেদনঃ [LINK]

‘কঠোর বিধিনিষেধে তো দোকান খোলা মানা। তাই বই সাজিয়ে বসি না। তবে প্রতিদিনই দোকানের সামনে আসি। যখন কোনো গাড়ি আসে, তখন কাছে গিয়ে জানতে চাই, বই কিনবে কি না। সারা দিনে হয়তো দু-চারজন ক্রেতা আসেন। তাতে দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। কিন্তু পুলিশের চোখে পড়ে গেলে তারা ধরে সোজা থানায় নিয়ে যায়। এরপর কোর্টে চালান দেয়। তখন কাজের দুই দিন তো যায়ই, সঙ্গে আরও দুই হাজার টাকা খরচ হয়।’ এভাবেই চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে নিজের জীবিকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন রাজধানীর নীলক্ষেত বই মার্কেটের বিক্রেতা জসীমউদ্দিন। ৩৫ বছর ধরে নীলক্ষেতের ফুটপাতে বইয়ের ব্যবসা করছেন তিনি।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন
জসীমউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার সময় সাইরেন বাজিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ছুটে আসছিল। সেই শব্দ শুনেই সতর্ক হয়ে গেলেন জসীমউদ্দিন। ঘাড় ঘুরিয়ে বুঝতে চাইলেন কোন দিক থেকে সাইরেনের শব্দ হচ্ছে, তা বুঝতে পারেননি। তবু দোকানটা আধখোলা অবস্থায় রেখেই দ্রুত নিরাপদ দূরত্বে সরে গেলেন। সেখান থেকেও সাইরেনের উৎস খুঁজলেন। কিন্তু সাইরেনের শব্দ শোনা গেলেও অ্যাম্বুলেন্স কিংবা ফায়ার সার্ভিসের গাড়িটা আর সেদিকে আসেনি। ফলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে ফেলতেই যেন দোকানে ফিরে এলেন।

জসীমউদ্দিনের আশপাশে বসা ফুটপাতের দোকানি ও মার্কেটের ব্যবসায়ীদের অবস্থাও যে একই রকম, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁরা প্রত্যেকেই প্রতিদিন নীলক্ষেতে আসেন। উদ্দেশ্যহীনভাবে ফুটপাতে বা গলিপথে হেঁটে, পরস্পরের সঙ্গে কথা বলে কিংবা এদিক-ওদিক পায়চারি করে ক্রেতা আসার অপেক্ষায় থাকেন। মাঝেমধ্যে পুলিশও বিধিনিষেধে দোকানপাট খোলা কি না, তা তদারক করতে আসে। তখন দোকানিরা সবাই যে যাঁর মতো সরে পড়েন বা পালিয়ে যান।

দোকানিদের কথা, এক বছর ধরে দেশে সব স্কুল-কলেজ বন্ধ। কোনো পাবলিক পরীক্ষা হচ্ছে না। কিছু কিছু চাকরির পরীক্ষা হলেও সেই উপলক্ষে বেচাবিক্রি তেমন হয় না। সব মিলিয়ে বইয়ের ব্যবসা একদমই বসে গেছে।

করোনার আগে দৈনিক আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার বই বিক্রি করতেন জসীমউদ্দিন। তাতে ৭০০-৮০০ টাকা করে মুনাফা থাকত। মাসে আয় হতো ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। সেই আয়ে বেশ ভালোই কাটত দিন। কেরানীগঞ্জে আট হাজার টাকা বাড়িভাড়া দিয়ে থাকতেন। চার কন্যার তিনজন স্কুল-কলেজে পড়ে। করোনার শুরুতে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে অনলাইনে পড়াশোনা শুরু হলে তিনি রাউটার কিনে বাসায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকশন লাগিয়ে দেন। এখন ব্রডব্যান্ডের খরচও চালাতে কষ্ট হচ্ছে। একমাত্র মুঠোফোন দিয়ে তিন মেয়ে পালা করে ক্লাস করছে। জসীমউদ্দিন বলেন, ‘এর চেয়ে বেশি কিছু করার সামর্থ্য আমার আর নেই। বাড়িভাড়াও জমে গেছে চার মাসের। সরকার যদি দু-চার ঘণ্টাও দোকান খোলার অনুমতি দিত, তাহলে হয়তো বেঁচে যেতাম।’

নীলক্ষেত্রের বই বিক্রেতারা জানান, গত বছর করোনার শুরুতে যখন সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে, তখন তাঁদের বই অনলাইনে বিক্রি করে দিতেন কিছু ছাত্রছাত্রী। এভাবে কিছু টাকা আসত। এ বছর সেই বিক্রিও নেই। অনলাইনে কেউ বই কিনছেন না। একজন দোকানি বলেন, ‘আমাদের বইয়ের ক্রেতারা সব মধ্যম আয়ের মানুষ। করোনায় তাদের আয়ও কমে গেছে। বই কিনবে কোথা থেকে?’

এরই মধ্যে চলে আসে পুলিশের একটি গাড়ি। একজন ভ্রাম্যমাণ বিড়ি-সিগারেট বিক্রেতা ও একজন মুচিকে রাস্তার ওপার থেকে ধরে এনে ভ্যানে তোলে পুলিশ। সেদিক থেকে চোখ ঘোরাতেই দেখা গেল, জসীমউদ্দিনসহ যে দু-তিনজন বই বিক্রেতার সঙ্গে এতক্ষণ কথা হচ্ছিল, তাঁরা সবাই উধাও। পুলিশ ভ্যান যতক্ষণ ছিল, দোকানিদের কাউকেই দেখা গেল না। পুলিশ ভ্যান চলে যেতেই আবার সবাই এসে হাজির।

এবার গলায় বিরক্তি চেপে বলেন, ‘এবার যান তো, আপা। আপনি থাকলে ক্রেতা এসেছে ভেবে পুলিশ বারবার আসবে। প্লিজ, আপনি দয়া করে চলে যান।’



করোনা মহামারিতে অপরাপর ব্যবসায়ীদের মতো সংকটে পড়েছেন দেশের বই ব্যবসায়ীরাও। রাজধানীর নীলক্ষেতের বই ব্যবসায়ীরা বলছেন, বই কোনও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নয়, শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এই ব্যবসা। করোনার কারণে গত পাঁচ মাস স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় বইয়ের ব্যবসাও বন্ধ। ব্যবসা না থাকায় চরম অর্থসংকটে রয়েছে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লাখ লাখ মানুষ। স্কুল ও কলেজ আরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকলে এই দুরবস্থা ক্রমশ বাড়তে থাকবে। তাছাড়া গার্মেন্টস-সহ অন্য খাতের ব্যবসায়ীরা সরকারি প্রণোদনা পেলেও বঞ্চিত হচ্ছেন বই ব্যবসায়ীরা। আত্ম-সম্মানের খাতিরে অন্যের দারস্থও হতে পারেন না তারা। তাই নীরবে কান্না ছাড়া কিছুই যেন করার নেই তাদের।

নীলক্ষেতের পুস্তক ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে সরকারি সাধারণ ছুটিতে এপ্রিল ও মে মাস দোকান বন্ধ ছিল। এরপর জুন থেকে দোকান খোলা হলেও বই বিক্রি নেই। কারণ কলেজ বন্ধ থাকায় নতুন একাদশ শ্রেণিতে ওঠা শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়নি। আবার এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের তো পরীক্ষাও স্থগিত রয়েছে। ফলে পাঠ্যপুস্তক বিক্রি হচ্ছে না। অন্যদিকে, অন্য বছরগুলোতে এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বইয়ের একটা রমরমা ব্যবসা হতো। সেটিও বন্ধ এ বছর। ফলে, সব ধরনের বিক্রিই বন্ধ রয়েছে। তাই অনেকে এখনও দোকান খুলছে না। কিন্তু ব্যবসা বন্ধ থাকলেও দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারী খরচ, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন খরচ তো মাফ হবে না। আবার গুদামে পড়ে থাকা অধিকাংশ বইও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবদিক দিয়েই তারা ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন।

নীলক্ষেত ইসলামিয়া মার্কেট বণিক বহুমুখী সমিতির পরিচালক ও লাইফ পাবলিশার্সের মালিক মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বই তো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নয় যে মানুষ সব সময় কিনবে। ফলে, দোকান খোলা রেখেও কোনও লাভ হচ্ছে না। কারণ স্কুল-কলেজ না খোলা পর্যন্ত বই বিক্রি হবে না।’

তিনি বলেন, ‘এই মার্কেটে ৭শ’র মতো বইয়ের দোকান আছে। প্রতি দোকানে গড়ে তিন জন করে কাজ করেন। এদের সবার পরিবার এই ব্যবসার আয়ের ওপর নির্ভরশীল। গত ৫ মাস ধরে কোনও ব্যবসা নেই। তাহলে আমরা কীভাবে চলি। সরকারি কোনও ধরনের সহযোগিতা পাইনি। সরকারের কাছে আবেদন থাকবে, অন্য ব্যবসায়ীদের মতো পুস্তক ব্যবসায়ীদের জন্য যেন প্রণোদনা ও সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা থাকে।’

নীলক্ষেতে শাহজালাল মার্কেট বহুমুখী সমিতির সভাপতি এম আবু জাফর নিজের দোকানে বসে বলেন, ‘আজকে সারাদিনে বিসমিল্লা করতে পারিনি। এখন সন্ধ্যা ৬টা বাজে, আর এক ঘণ্টা পরে দোকান বন্ধ করবো। তাহলে কীভাবে আমাদের সংসার চলবে। খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে আছি। এই মার্কেটে ২৭টি দোকান আছে। সবার একই অবস্থা।’

দোকানের কর্মসচারীদের দেখিয়ে আবু জাফর বলেন, ‘গত মাসে সাত হাজার টাকা বেতনের মধ্যে ৬ হাজার টাকা দিয়েছি। এখনও এক হাজার টাকা দিতে পারিনি। এই মাসের বেতন, ঈদের বোনাস কীভাবে দেবো? এছাড়া মাস শেষে দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, বছর শেষে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি তো আছেই। সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সহযোগিতা পাইনি। আবার রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাত পাততেও পারছি না। আসলে আমাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখার কেউ নেই। নরীবে কান্না ছাড়া আর কী করতে পারি।’

জানা গেছে, ব্যবসা না থাকায় অনেকে খরচ কমানোর জন্য দোকানের কর্মচারী ছাঁটাই করছেন। আবার কোনও কোনও দোকানি ছাঁটাই না করলেও কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছেন না।

গীতাঞ্জলি বুক সেন্টারের কর্মচারী আরিফ বলেন, ‘আগে আমরা এই দোকানে দুই জন কর্মচারী ছিলাম। গত মাসে মালিক একজনকে বিদায় করে দিয়েছেন। আগে প্রতিদিন ছয় থেকে আট হাজার টাকার বই বিক্রি হতো। এখন সেটা ১-৫ হাজারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কোনও কোনও দিন বিক্রি হয় না। আজকে সারাদিনে এক টাকারও বিক্রি করতে পারিনি। সারা মাসে যা বিক্রি হয় তা দিয়ে দোকান ভাড়া ৩২ হাজার টাকা দিতেই কষ্ট হয়। তাহলে আমাদের বেতন কীভাবে হবে।’

গীতাঞ্জলির মতো একই অবস্থা মেধা বিকাশ-২ বুক সেন্টারের। এই দোকানের মালিক আরিফ হোসেন বলেন, ‘সারাদিন ৫শ’ টাকা বিক্রি হয়েছে। তবে, সেটা নিজে বিক্রি করিনি। অন্য আরেক দোকানি বিক্রি করে দিয়েছেন। তাহলে মাস শেষে দোকানের ভাড়া কীভাবে দেবো? নিজে কীভাবে চলবো এবং সরকার কীভাবে চলবে? আমাদের সামনে অন্ধকার। জানি না কী হবে। স্কুল-কলেজ খুললে তখন বিক্রি কিছুটা বাড়বে।’

বই দোকানিরা বলছেন, সরকারি সাধারণ ছুটিতে এপ্রিল ও মে—এই দুই মাস দোকান বন্ধ ছিল, এই দুই মাসের ভাড়া মওকুফের জন্য মালিক সমিতির কাছে আবেদন করা হয়েছে। একইসঙ্গে যতদিন করোনা মহামারি থাকবে, সেই মাসগুলোতে দোকান ভাড়া ৫০ শতাংশ কমানোর আবেদন করা হয়েছে। তবে সমিতির দায়িত্বশীলরা বলছেন, দুই মাসের ভাড়া মওকুফ করা হবে। কিন্তু ভাড়া সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ শতাংশ কমানো হবে।

ইসলামিয়া মার্কেট বণিক বহুমুখী সমিতির পরিচালক মালিক মিজানুর রহমান বলেন, ‘দোকান মালিকরা তো ভাড়ার টাকা দিয়ে চলেন। তারপরও সবাই এপ্রিল ও মে মাসের ভাড়া মওকুফ করতে রাজি হয়েছেন। আর আগামী সেপ্টেম্বরে যেহেতু স্কুল-কলেজ খুলবে, ফলে সেই মাস পর্যন্ত ভাড়া ৩০ শতাংশ কমানো হয়েছে।’

তবে মেধা বিকাশ-২ এর মালিক আরিফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দুই মাসের ভাড়া মওকুফের বিষয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ শতাংশ ভাড়া কম নেওয়ার বিষয়ে জানি।’

৩০ বছরের বই ব্যবসা ছেড়ে গেছেন মোস্তফা

পুস্তক ব্যবসায়ীদের মধ্যে করোনার আঘাত হয়তো বেশিই গায়ে লেগেছে গোলাম মোস্তাফার। ফলে আর্থিক ক্ষতি সামলাতে না পেরে বাধ্য হয়ে ৩০ বছরের বইয়ের ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে পটুয়াখালীতে নিজ গ্রামে চলে গেছেন তিনি। শুধু তিনি নয়, ব্যবসার এই মন্দাভাব না গেলে তার মতো আরও অনেককে দোকান ছেড়ে দিতে হবে বলেও ব্যবসায়ীরা মনে করেন।

বাংলা সাহিত্যের নতুন ও পুরাতন বই বিক্রি হতো মোস্তফার বই ঘরে। কিন্তু করোনার কারণে ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়লে বাধ্য হয়ে দোকান বিক্রি করে দেন তিনি। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘১৯৯০ সাল থেকে আমি বইয়ের ব্যবসার করে আসছি। ২০০৫ সাল থেকে নীলক্ষেতে ইসলামি মার্কেটে বইয়ের ব্যবসা শুরু করি। কিন্তু করোনার কারণে সেই ব্যবসা ছেড়ে দিতে হয়েছে। এটা আমার জন্য কত কষ্টের ছিল, তা কাউকে বোঝাতে পারবো না।’

মোস্তাফা আরও বলেন, ‘দোকান ও গুদামের ভাড়া ছিল ৪৫ হাজার টাকা। কিন্তু সেখানে দুই মাস কোনও ব্যবসা হয়নি। এরপর জুন থেকে দোকান খুলে দেখি দৈনিক এক হাজার টাকার বেশি বিক্রি হয় না। তাহলে দোকান ভাড়া দেবো কীভাবে? খাবো কীভাবে? তাই বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছি। এখন গ্রামের বাড়িতে আছি, দেখি অন্য কোনও ব্যবসা করা যায় কিনা এখানে। যদি বইয়ের ব্যবসা আবারও ভালো হয়, তাহলে আগামী বছর আবার ঢাকা যাবো।’

ব্যবসা পরিবর্তন করছেন অনেকে

গত ১০ বছরের বেশি সময় নীলক্ষেতের ফুটপাতে পুরাতন বইয়ের ব্যবসা করতেন রবিন হোসাইন। কিন্তু দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে ব্যবসা পরিবর্তন করেন তিনি। শুধু রবিন নয়, ফুটপাতের অধিকাংশ ব্যবসায়ী ব্যবসার ধরন পরিবর্তন করেছেন। বই ব্যবসার মন্দা কেটে গেলে আবারও পুরাতন ব্যবসায় ফেরার ইচ্ছা তাদের।

রবিন হোসাইন বলেন, ‘গত ৪-৫ মাস আগেও এই পুরো ফুটপাতে ৪০ থেকে ৫০টি পুরাতন বইয়ের দোকান ছিল। এখন দেখেন একটি বইয়ের দোকানও নেই। কারণ করোনায় বই বিক্রি একেবারেই নেই। ফলে কেউ বাড়িতে চলে গেছেন, আবার কেউ কেউ জীবিকার তাগিদে অন্য ব্যবসা করছেন।’

তিনি বলেন, ‘করোনার মধ্যে এপ্রিল-মে মাসে বাড়িতে ছিলাম। কিন্তু এভাবে বাড়িতে বেকার বসে থাকলে তো না খেয়ে মরে যেতে হবে। তাই জুন মাসে ঢাকায় আসার পর মাস্ক, সাবান, পানি গরম করার কেটলিসহ বিভিন্ন কুকারিজ আইটেম বিক্রি শুরু করছি। কারণ বেঁচে তো থাকতে হবে।’

রবিনের মতো বই ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে আমি আর আমার বড় ভাই ফুটপাতে পুরাতন বই বিক্রি করতাম। কিন্তু করোনার মধ্যে বইয়ের চাহিদা কমে গেছে। এখন মোবাইলের হেডফোন, সেলফি স্টিকসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে কোনোমতে টিকে আছি।’

Post a Comment

1 Comments

  1. নাজনীন সুলতানাJuly 15, 2021 at 12:25 AM

    Soooooo SAD

    ReplyDelete

মন্তব্যের দায় মন্তব্যকারীর, সম্পাদকের নয়।