কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদারের সম্পাদনায় প্রকাশিত হলো সাহিত্য পত্রিকা ‘বাঙ্গাল’

কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার এবার নেমেছেন সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনায়৷ ইতিপূর্বে তিনি গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ রচনা করে বাংলাদেশের বোদ্ধা পাঠকের কাছে নিজের অবস্থান পোক্ত করেছেন৷ ‘মুসলমানমঙ্গল’, ‘পিতৃমঙ্গল’ তাঁর জনপ্রিয় উপন্যাস৷

বাঙ্গাল পত্রিকার সূচিপত্র

‘বাঙ্গাল’ সম্পাদনার বিষয়ে বলেন,
বাংলাসাহিত্যে বিপ্লব আনবে না ‘বাঙ্গাল’৷ তেমন কোনো প্রতিজ্ঞা আমাদের নেই।
আমরা শুধু নিজেদের এবং পাঠকদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে বাংলাসাহিত্যের বিশাল এবং গৌরবোজ্জ্বল ভাণ্ডার রয়েছে। সেই গৌরবের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার পাশাপাশি আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব এই সময়ের সকল লেখক, কবি ও চিন্তকের।
প্রকাশনা-বন্যার এই কালে 'অশিক্ষিত' লেখক-কবি নামধারীদের দ্বারা বাংলাসাহিত্যের পাঠকরা উৎপীড়িত। (অশিক্ষিত লেখক-কবি তাদের বলা হচ্ছে যারা আমাদের ভাষার দেড়শো বছরের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্মগুলির সাথে অপরিচিত)। কোনো নতুন পাঠক অজস্র বই এবং লেখকের ভিড় থেকে কীভাবে বেছে নেবেন এই সময়ের উন্নত ও সমৃদ্ধ সাহিত্যকর্মগুলো?
সেই পাঠকদের কিঞ্চিত সাহায্য করার জন্যই 'বাঙ্গাল'।
আমরা কোনো দুর্বল ও চটকদার লেখা ছাপব না।  ‘বাঙ্গাল’-এর পাঠক যেন ধারণা পান সমকালের সত্যিকারের সাহিত্যকর্মের মানের উচ্চতা।
কোনো নতুন পাঠক যেন গল্প-প্রবন্ধ-কবিতা-আলোচনা পাঠ করে শ্রদ্ধাশীল হতে পারেন আমাদের সাহিত্যের প্রতি সেইজন্যই আমাদের এই উদ্যোগ। এত কষ্ট স্বীকার।
সাথে থাকুন।

বাঙ্গাল পত্রিকায় লেখার নিয়ম

কাব্যশীলন নামক অনলাইন সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক তিনি অনেকদিন থেকেই৷ এবার তিনি প্রিন্ট পত্রিকায় এলেন৷ ফেসবুকে তিনি লিখেছেন,
ভার্চুয়াল ভূতের মতো পত্রিকা সম্পাদনা করার কোনো মজা নেই।
প্রিন্ট অর্ডারের ১৫ দিন আগে থেকেই রোজ বসতে হবে ৪-৫ জন।
নির্বাচিত লেখাগুলো নিয়েও বার বার আলোচনা হবে, প্রুফ কাটতে বসে বানান নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হবে, সাহিত্যের সব বিষয় নিয়ে কথা হবে, কথা হবে দেশের অবস্থা নিয়ে, রাজনীতি নিয়ে, কোনো কোনো লেখক-কবিকে নিয়ে মজার কৌতুক হবে, কারো প্রতি আবার প্রকাশিত হবে বিপুল শ্রদ্ধা, চা হবে, সিংগারা হবে, ধোঁয়া উড়বে-- তবে না মনে হবে আমরা পত্রিকা বের করছি।
করোনা কি আর কোনোদিন সেই সুযোগ দেবে?
আমরা কি আবার ফিরে পাবো স্বাভাবিক জীবন?

বাঙ্গাল: গ্রাহক হবার নিয়ম

‘বাঙ্গাল’ পত্রিকার গ্রাহক সংগ্রহে জাকির তালুকদার অত্যন্ত তৎপর৷ এ বিষয়ে ফেসবুকে তিনি লিখেছেন,
আমার ঘনিষ্ঠতম বন্ধু বা শুভানুধ্যায়ীদের কেউ বলতে পারবেন না যে আমি আমার কোনো বই কেনার জন্য অনুরোধ করেছি। মুখে তো দূরের কথা, আভাসে-ইংগিতেও করিনি।
সেই আমি ‘বাঙ্গাল’ পত্রিকার গ্রাহক হবার জন্য অনবরত মানুষের ইনবক্সে নক করে যাচ্ছি।
কেন?
এই ডামাডোলের সময়ে পাঠক যেন সত্যিকারের সাহিত্যমূল্যসম্পন্ন ও মৌলিক চিন্তার লেখাগুলো  পাঠের সুযোগ পান।
পত্রিকা সম্পাদনা করা খুব সুখের বিষয় নয়। যে কয়টি লেখা আমি ছাপব, তারচেয়ে অনেক বেশি লেখা বাদ দিতে হবে। কারণ দুর্বল লেখা ছাপতে চাই না। সেই লেখক বা কবি আমার যতই ঘনিষ্ঠ হোন না কেন। যাদের লেখা ছাপা হবে না, তারা অনেকেই অভিমানে আমার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে পারেন। সেই ঝুঁকিটাও আমাকে নিতে হচ্ছে।
একাধিক শুভানুধ্যায়ী পত্রিকার সকল ব্যয়ভার বহন করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। রাজি হইনি। কারণ কারো পকেটে আমার হাত থাকলে পকেট যেখানে যাবে, আমাকেও সেখানে যেতে হবে। আমি বিন্দুমাত্র স্বাধীনতা বিসর্জন দিতে রাজি নই।
আমরা রুচিশীল দীক্ষিত পাঠক চাই। ব্যবসা নয়। যাদের এই ধরনের পত্রিকা সম্পর্কে সামান্যতম ধারণা আছে তারা জানেন, এসব পত্রিকা দিয়ে ব্যবসা হয় না।
আমাদের 'বাঙ্গাল' রুচিশীল পাঠকদের একত্রিত করার একটি চেষ্টাও বটে।
আপনাদের সহযোগিতা চাই।


Post a Comment

0 Comments